কুড়িগ্রামে বয়ে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও হিমেল হাওয়া

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: কুড়িগ্রামে রবিবার ভোররাত থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তুহিন মিয়া জানান, রবিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা এবছরে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলা দুপুরের আগে সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে তাপমাত্রা কম ছিল। আবার সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে নেমে আসছে কনকনে ঠান্ডা। উত্তরীয় হিমেল হাওয়ার কারনে বেড়ে যায় কনকনে ঠান্ডা। এ অবস্থা চলে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে শ্রমজীবি ও নিম্ন আয়ের মানুষের। জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকেই বাধ্য হয়ে ঠান্ডা উপেক্ষা করেই বের হচ্ছেন কাজে। গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীত কষ্টে ভুগছেন ছিন্নমুল ও হতদরিদ্র মানুষেরা। এতে করে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন জেলার নদ-নদী বেষ্টিত সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষ। সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের গারুহাড়া গ্রামের কৃষ্ণ নামের এক জেলে বলেন, প্রচুর ঠান্ডা পড়ছে তার পরেও জীবিকার তাগিদে মাছ ধরতে বের হছি। যতই ঠান্ডা হোক না কেন আমাদের বাহির হতে হয়। বাহির না হলে যে সংসার চলবে না।সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর এলাকার সবুর আলী জানান, প্রায় এক মাস ধরে ঠান্ডায় ভুগছি। রাত হলে ঠান্ডা বেড়ে যায়। খুব বেশি গরম কাপড় নাই। পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।

জেলা শহরের রিক্সচালক সদর উপজেলার আমজাদ হোসেন জানান, আমি শহরে রিক্সা চালাই। সন্ধার পর থেকে আর রিক্সার হেন্ডেল ধরা যায় না। কনকনে ঠান্ডায় যাত্রীও পাওয়া যায় না। শীত না যাওয়া পর্যন্ত খুব কষ্টে আছি।সদরের কাঁঠালবাড়ি এলাকার বৃদ্ধ নবুয়ত হোসেন জানান, জারের মধ্যে বেরবার পাইনা।হাত পাও কোকড়া নাগে।উসুম নেয়ার জন্য আগুন তাপাই।অপরদিকে,বীজতলাগুলো অতিরিক্ত ঠান্ডায় ও ঘন কুয়াশায় কিছুটা কুঁকড়ে গেছে।কিন্তু পুরোপুরি ক্ষতি হওয়ার আশংকা নেই বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, এ পর্যন্ত জেলার ৯ উপজেলার শীতার্ত মানুষের মাঝে ৬৩ হাজার কম্বল পাওয়া গেলেও ৩৮ হাজার বিতরণ করা হয়েছে এবং বাকিগুলোও বিতরণের পর্যায়ে। বেসরকারি ভাবেও বিতরণ করা হয়েছে আশা করছি সমস্যা হবে না। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত নানা রোগ। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু। কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট বেডের বিপরীতে দ্বিগুনেরও বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বর্হিবিভাগেও বেড়েছে রোগীর সংখ্যা।ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: শাহিনুর রহমান শিপন জানান, হাসপাতালে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি। তারপরও সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *