বিএনপিপন্থী ৭ আইনজীবীকে আপিল বিভাগে তলব

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: আপিল বিভাগের দু’জন বিচারপতির পদত্যাগের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়ায় এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ বিএনপিপন্থী সাত আইনজীবীকে তলব করেছেন আপিল বিভাগ। আগামী ১৫ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

বুধবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিএনপিপন্থী অন্য আইনজীবীরা হলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

একইসাথে তাদের সুপ্রিম কোর্টসহ সব আদালত অঙ্গনে কোনো ধরনের মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি। অন্যদিকে বিএনপিপন্থী সাত আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্ট বার এডহক কমিটির আহ্বায়ক মহসিন রশিদ, সৈয়দ মামুন মাহবুবু প্রমুখ।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আগামী ১৫ জানুয়ারি সাতজন কনটেমনারকে আদালতে হাজির থাকতে বলেছেন। একইসাথে তাদেরকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। এছাড়া আদালত অঙ্গনে কোনো ধরনের মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলেছেন আপিল বিভাগ।

এদিকে সাত আইনজীবীরে বিরেুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায় অন্তরভূক্ত হতে সুপ্রিম কোর্টের ১৯৫ জন আইনজীবী আবেদন করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায় সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ আবেদনটি করেছেন।

এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক আলহাজ গীয়াস উদ্দিন আহমেদ, এডহক কমিটির সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল, ইউনাইটেড ল’ইয়ারস ফ্রন্টের (ইউএলএফ) সমন্বয়ক সৈয়দ মামুন মাহবুব, আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক, কে এম জাবির, খালেদ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী, ডঃ রফিকুল ইসলাম মেহেদী, গোলাম রহমান, কে আর খান পাঠান, রেজাউল করিম রেজাসহ ১৯৪ জন আইনজীবী আদালত অবমাননার মামলায় অন্তরভূক্ত হতে অপর একটি আবেদন করেন। বিষয়টি বুধবার আইনজীবী মহসিন রশিদ আদালতে উপস্থাপন করেন।

তিনি আদালতে বলেন, আমরা প্রায় দুই শ’ আইনজীবী এ আবেদনের সাথে যুক্ত হতে চাই। তখন আদালত বলেন, আদালত অবমাননার আবেদনে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। এরপর আদালত আবেদনটি ফেরত দেন।

এরপর আইনজীবী মহসিন রশিদ আদালতে বলেন, আমরা মেয়র (ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস) সাহেবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছি। তখন আদালত বলেন, আপনারা বিষয়টি সোমবার মেনশন করেন।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৫ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

গত ২৯ আগস্ট বিএনপিপন্থী সাতজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে। এরপর ৩০ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ ১৮ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। একইসাথে আদালত অঙ্গনে মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন আইনজীবী নাজমুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি।

আদালত অবমাননার আবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাথে তৎকালীন আপিল বিভাগের বিচারপতিরা একত্রে বিচারকাজ পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে বর্তমান বিনা ভোটের সরকারের রোষানলে পড়ে বিচারপতি সিনহা দেশ ত্যাগ ও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি আরো বলেন, আপিল বিভাগের দু’জন বিচারপতিকে বিচার কাজ থেকে বিরত না রাখলে ৪৮ ঘণ্টা পরে তাদের পদত্যাগের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে মর্মে হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, শোক দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেদের ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ায় আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর পদত্যাগের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ দাবি জানান।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *