তানোরে চাচাদের বিরুদ্ধে এতিম ভাতিজার জায়গা দখলের অভিযোগ 

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী মান্দার ভারশোঁ ইউনিয়নের (ইউপি) চৌবাড়িয়া  গ্রামের বাসিন্দা মৃত লহির উদ্দিনের পুত্র আলতাজ উদ্দিন প্রামানিক ও আতাউর রহমান প্রামানিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। তাদের ভাই প্রয়াত আব্দুল হামিদ ওরফে মুন্তাজের পুত্র ভাতিজা সাজ্জাদ হোসেন সুমন তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন।  আলতাজ ও আতাউরের এই প্রতারণার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘটনা তদন্ত করে আলতাজ ও আতাউরের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি করেছেন চৌবাড়িয়ার জনগণ।
জানা গেছে, তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মালশিরা মৌজায়, খতিয়ান নম্বর ৬৯ ও আরএস-৭৭১ নম্বর দাগে ২৩ শতক সম্পত্তি রয়েছে, এর মধ্যে ৪ শতক সম্পত্তি রাস্তার মধ্যে পড়েছে।
জানা গেছে, মালশিরা গ্রামের মৃত সখাতুল্লাহ মন্ডলের পুত্র রজব আলী মন্ডলের কাছে থেকে ক্রয় করেছেন  চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত লহির উদ্দিন প্রামানিকের পুত্র আব্দুল হামিদ ওরফে মুন্তাজ ও এন্তাজ। যাহার দলিল নম্বর ১২২৫ তারিখ ১৯/০২/১৯৮৬ ইং। আদালতের আদেশ মুলে এসব সম্পত্তির খাজনা-খারিজও করা হয়েছে যাহার
খারিজ কেস নম্বর (৭৩৩ IX-I) ২০২২-২৩ এবং (১০১২IX-I)২০-২২-২৩। উক্ত সম্পত্তির ওপর ১৬টি দোকান ঘর রয়েছে। কিন্ত্ত বিগত ২০১৮ সালে লহির মন্ডল মারা গেলে  তার দুই পুত্র আলতাজ ও আতাউর উক্ত সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে নানা অপতৎপরতা শুরু করে। এমনকি খারিজ বাতিলের আবেদন করেছেন।
হাটের ব্যবসায়ী তৌহিদুল, আসাদুল ও শাহীন বলেন, সম্পত্তির মালিক সুমন।কিন্ত্ত সুমনের দাদা মারা যাবার পর তার দুই চাচা আলতাজ ও আতাউর দোকানের ভাড়া আদায় শুরু করেছে, এমনকি আতাউর বিশাল সারের গুদাম করে রেখেছেন। এবিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন সুমন বলেন, তার দাদা মারা যাবার পর তার দুই চাচা আলতাজ ও আতাউর উক্ত সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এমনকি দোকান থেকে গত ৫ বছরে ভাড়া বাবদ প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সেই টাকায় তার বিরুদ্ধে কাজ করছে। শুধু তায় নয় দোকানদারকে হুমকি দিয়েছে তারা যদি সুমনকে ভাড়া দেন তাহলে তাদের দোকান ছেড়ে দিতে হবে। আবার কয়েকজনের কাছে থেকে জামানত বাবদ বড় অঙ্কের অর্থ নিয়েছেন। এছাড়াও তিনটি পুকুরের কোনো হিস্যা দিচ্ছে না, আবার আলতাজ মিথ্যা তথ্য দিয়ে মালশিরা মৌজার বড় পুকুর অবস্থিত গভীর নলকুপের অপারেটর থেকে তাকে সরিয়ে দিয়েছে। সুমন বলেন, আলতাজ ও আতাউরের চাপে তার বাবা অকালে মারা গেছে তবে সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে এক চাচাকে শারীরিকভাবে অসুস্থ করে রেখেছে আলতাজ ও আতাউর যা গ্রামের সকল মানুষ জানেন। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আলতাজ উদ্দিন প্রামানিকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আতাউর রহমান প্রামানিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ভাতিজা সুমন জালিয়াতি করে এসব সম্পত্তি খাজনা-খারিজ করেছেন।
তিনি বলেন, খাজনা-খারিজ বাতিলের আবেদন করা হয়েছে, আগামিতে শুনানি হবে।এছাড়াও যে তহসিলদার খাজনা-খারিজ করেছে সে এখন জেল-হাজতে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিগত ২০১৮ সালে আলতাজ ও আতাউরের পিতা লহির উদ্দিন মারা যাওয়ার পর থেকে ভাতিজা সুমনের উপর মানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। শুধু মাত্র সম্পদ নিয়েই চলে এমন অমানবিক নির্যাতন। সুমন একজন এতিম ছেলে। আলতাজ ও আতাউর আপন চাচা। তারা আগলে রাখবে ভাতিজাকে। সেটা না করে মৃত ভায়ের সম্পদ কিভাবে দখল করা যায় এচিন্তায় মরিয়া। তাদের তো টাকা ও সম্পদের অভাব নাই। তাহলে আপন ভাতিজার সাথে এমন নির্যাতন কেন। যারা নিজের ভাই ভাতিজার সম্পদ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে, তারা কিভাবে জনগণের প্রতিনিধির স্বপ্ন দেখান।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *