নাটোরে নৌকার মনোনয়ন চান কৃষক সামাদ ভুঁইয়া!

রাজশাহী

আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর: দ্বাদশ নিবার্চনে নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে চান নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ের দিয়ার সাতুরিয়া গ্রামের আব্দুস সামাদ ভুঁইয়া। এজন্য তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থীতা চেয়ে নৌকা প্রতীকের আবেদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করার জন্য তার সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে এই প্রতিবেদককে জানান। এই আসনে ৯ প্রার্থীর প্রায় সকলেই হেভিওয়েট প্রার্থী।

এই আসনের প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, সাবেক ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকা্‌ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মালেক শেখ, নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি, সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ রত্মা আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ডলার।

আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান দাবি করে আব্দুস সামাদ ভুঁইয়া জানান, তার পিতা প্রয়াত আফাজ উদ্দিন ভুইয়া  ও তার মা আয়েশা বেগম সহ পরিবারের সকলেই আওয়ামীলীগ তথা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। ১৯৯৫ সালে এসএসি পাশ করার পর তিনি কলেজে ভর্তি হন এবং ইন্টার পাশ করেছেন। আওয়ামীলীগ করতে গিয়ে তিনি ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার হন। বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা শহরের তেবাড়িয়া এলাকায় ধরে বেধড়ক মারপিট করা সহ শরীরে গরম পানি ঢেলে দিয়েছিল। তিনি লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে স্বাক্ষাত করা তার দির্ঘদিনের প্রবল ইচ্ছা। মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর সাথে সামনা সামনি বসে কথা বলবেন এমন প্রত্যাশা নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি নাটোরের উন্নয়ন সহ তৃনমুল মানুষ ও তার নিজের কিছু কথা বলতে চান। এই কথাগুলো বলতে পারলে তার জীবনের চাওয়া পাওয়ার অনেক কিছুই পুরন হবে বলে তিনি মনে করেন। তাকে নাটোর সদর আসনে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি সকলকে সাথে নিয়ে ভোটে লড়বেন। সেই প্রস্তুতিও তার রয়েছে বলে জানান।

এলাকাবাসী অনেকেই তাকে সমর্থন জানালেও অনেকে বিদ্রুপও করছেন। এলাকাবাসী জানায়, চাল চুলাহীন আব্দুস সামাদ ভুইয়া টিনের ছাউনি ঘরে এখনও বাস করেন। বিধবা এক বোনকে নিয়ে থাকেন সেই বাড়িতে। আয়ের কোন উৎস নেই। বাপ দাদার রেখে যাওয়া জমিতে ফসল আবাদ করে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের দুই ভাইবোনের সংসার। ওই জমির কিছু অংশ বিক্রি করে দলীয় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তিনি। তার এই কার্যক্রমকে অনেকেই পাগলামু বলে মনে করছেন।

প্রতিবেশী পশু চিকিৎসক শরীফুল ইসলাম বলেন, আব্দুস সামাদ একজন সহজ সরল মানুষ। কট্টর আওয়ামীলীগার। যেখানেই দলের মিটিং মিছিল হয় সেখানেই তিনি ছুটে যান। প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে কিছু বলাই তার চাওয়া পাওয়া।

হাজী আবু বক্কর বলেন, আব্দুস সামাদ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি দেখা করার জন্য দলের মনোনয়ন চেয়েছেন। তার জীবনের অনেক দুঃখ কষ্ট রয়েছে। আওয়ামীলীগের জন্য সে পাগল। নির্বাচন করতে পারুক বা না পারুক সে আওয়ামীলীগের মত একটি ঐতিহ্যবাহি দলের মনোনয়ন চেয়েছেন যা তার একটি সাহসি পদক্ষেপ।

আব্দুস সামাদ ভুঁইয়া বলেন, তাকে নিয়ে অনেকে মশকরা করতে পারেন। তার কোন প্রতিবাদ নেয়। তবে প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দিয়ে অনেকেই তার পাশে এসে দাঁড়াবেন। অনেকেই তাকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শিকার বলেন, আব্দুস সামাদ ভুইয়ার দির্ঘদিনের ইচ্ছা জাতীয় নির্বাচনে সে একবার দলের হয়ে মনোনয়ন চাইবেন। এবার সেই সাহস তিনি দেখিয়েছেন। একজন কৃষক হয়েও আব্দুস সামাদ তার ইচ্ছা পুরনের জন্য সাহসি পদক্ষেপ নিয়েছে। সামাদ ভুঁইয়ার ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রী পাশে বসে কথা বলবেন। মনোনয়ন পেলে তারা তার পাশে থাকবেন। তার ইচ্ছা পুরণ হোক এমন প্রত্যাশা তার শুভাকাংখিদের।

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *