বাঘায় ত্রাণ পাননি জুতার মিস্ত্রী নিপেন দাস,করোনা ঝুঁকিতেও কাজ করছেন বাজারে

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি:
বয়স হয়েছে প্রায় ৬০ বছর। দৈনিক আয়ের টাকা দিয়ে ৪ সদস্যর সংসার চালান জুতার মিস্ত্রি নিপেন চন্দ্র দাস। তার বাড়ি বাঘা পৌর সভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মিলিক বাঘা গ্রামে। এই পেশার মানুষের মধ্যে সেই গ্রামে স্ত্রী ছেলে নিয়ে বসবাস তার। করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও সংসার চালানোর তাগিদে মুখে মাক্স ব্যবহার করে হাট-বাজারে কাজ করছেন তিনি। বৃহসপতিবার (০২-০৪-২০২০) সাপ্তাহিক বাঘার হাটে দোকান নিয়ে বসে থাকলেও ঘরের বাইরে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞায় লোকসমাগম কম। তাই আনুপাতিকহারে কাজও তেমন হয়নি। সপ্তাহ দুই ধার কর্জ করে চলার পর সংসার চালানোর তাগিদেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বাজারে।

এদিন বৃহসপতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় চলতি পথে দেখা হলে কথা হয় তার সাথে। নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বাজারে আসার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন,কাজ না করলে খাবো কি? যে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করছে,তাও পাননি। এজন্য তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নেতাকেও বলেছেন কিন্তু অদ্যাবদি ত্রানের কোন কিছুই পাননি। তবে মাক্সটা একজন দিয়েছে। কাজ করে আয় হয়েছে ৬০ টাকা। তা দিয়ে বাজার করে বাড়ি ফিরবেন। তার মেঝ ছেলে বিষ্ণও তার মতো এই কাজ করে ৩ সদস্যর সংসার চালান। সেও ত্রানের কোন কিছু পাইনি। বড় ছেলে কৃষ্ণ থাকেন দুর্গাপুরে মামার বাড়িতে। সেও সেখানে একই কাজ করে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিন হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,সংখ্যালঘুদের তালিকা মেয়রের কাছে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মেয়র নিজে দিবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শুধু এরাই নয়,তাদের মতো অনেক অসচ্ছল মানুষ এখনো ত্রাণ পায়নি। তবে পাচ্ছে কারা? অনেকেই ফেসবুক আইডিতে অভিযোগ করেছেন,যাদের পাওয়ার কথা তারা নাকি সবাই পাচ্ছেননা।
সেলিম সর্দার নামের একজন তার ফেসবুক আইডিতে কিছু বাড়ির ছবি দিয়ে লিখেছেন,এই সব বাড়ি যাদের তাদের অনেক টাকা পয়সা তাই তাদের বাড়িতে কোনো ত্রাণ আসেনা এই সব বাড়ি আলা দিন মজুর না।
দেখা যাচ্ছে যারা ত্রাণ পাচ্ছে তারে সবার বড় বড় বাড়ি দেখে শুনে তাদের কে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে ।

মুল কারন যাদের কে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে তারা তো সবাই বড় বড় নেতাদের পরিচিত আত্মীয় স্বজনরা তাই তাদের কে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। আর এই সব দিন মজুর তাদের কে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না কারন কোন নেতার আত্মীয় স্বজন না এরা।

তাই এদের দিকে দেখার কেও নাই গরিব না খেয়ে মরে গেলে দেশের জন্য হয়তো ভালো তাই গরীবদের ত্রাণ দিয়ে কি হবে। আমার বাড়ির পাশে সবাই তাই আমার খারাপ লাগছে, খারাপ লাগলেও আমার কি করার আছে আমি তো আর ত্রান দিতে পারছিনা আমিও গরিবের কাতারের মানুষ কিন্তু আমার লাগবে না। আপনারা যারা ত্রাণ দিচ্ছেন দয়া করে একটু দেখে শুনে দেন।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতো কর্মহীন নিম্ন আয়ের দরিদ্রজনগোষ্টির মাঝে প্রধান মন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে (দুর্যোগ ব্যব¯’াপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক প্রদত্ত) প্রাপ্ত চা’ল গত ২৯ মার্চ থেকে বিতরন করা হয়েছে। ব্যাক্তি উদ্যোগে ছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *