করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ পরিবারের উপার্জন

জাতীয় বিশেষ সংবাদ লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: করোনার প্রভাবে সৃষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিশু, বিশেষত যারা শহর বা গ্রামের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আর ৯০ দিনে ‘লকডাউনে’ কার্যত অর্থনৈতিক কর্মকাÐ স্থবির হয়ে পড়ায় দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে দৈনিক রোজগার বা ব্যবসা বন্ধ থাকায় ৭৮.৩ শতাংশ পরিবারের উপার্জন কমেছে।

শনিবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু। যার মধ্যে ৪৬ শতাংশ দ্রারিদ্র এবং এর এক-চতুর্থাংশ অতিদারিদ্রতার মধ্যে বেড়ে উঠছে।

সংস্থাটির অন্তর্র্বতীকালীন ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন গোমেজ বলেন, আমরা শংকিত। বিশেষত ৫ বছরের কম বয়সী সেই সব শিশুদের নিয়ে যারা চলমান পরিস্থিতিতে পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছে। ফলে কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমিত হলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়বে শিশুরা। বেড়ে যতে পারে শিশু মৃত্যুর হার।

তিনি বলেন, দেশের ২৬টি জেলার ৫৭টি উপজেলার আমাদের কর্ম এলাকাগুলোতে আমরা দেখেছি খাদ্য সংকটে শিশুরা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে পাচ্ছে না। এতে করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়বে।

চন্দন গোমেজ আরও বলেন, আমি শংকিত সেই ৮৭ শতাংশ শিশুদের নিয়ে যারা বাড়িতে থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে এবং ৯১.৫ শতাংশ শিশু যারা কোভিড-১৯ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের শিশু এবং তাদের পার্শ্ববর্তী জনবসতিসহ বাংলাদেশের সব শিশুদের বর্তমান পরিস্থিতিতে যেসব সমস্যা প্রভাবিত করছে তা সমাধানে আমাদের দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া এবং এই সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে, জরিপ এলাকার ৯৪.৭ শতাংশ পরিবারে খুব সামান্য অথবা কোনো খাবার সঞ্চিত নেই যেখানে ৩৮.৫ শতাংশ শিশু এবং ৫৮.৯ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে সর্বোচ্চ দুইবেলা খেতে পারছেন। এছাড়া ৫৮ শতাংশ পরিবার খুব কম খাবার খেয়ে দিন পার করছে। প্রায় ৩৪ শতাংশ পরিবার রান্না, ধোয়া-মোছা ও পান করার জন্য নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ পরিবার স্বাস্থ্যবিধি উপকরণ এবং পরিষ্কার পানির অপর্যাপ্ততার কারণে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারছে না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের ৫২টি উপজেলার ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১ হাজার ৬১৬ জন শিশু এবং ২ হাজার ৬৭১ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর পরিচালিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে র‌্যাপিড ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ।

সূত্র: যুগান্তর

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *