আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার চেষ্টা করে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়া হবে। ‘যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের বিরুদ্ধে স্থগিত সব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করবে’-মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন রুহানি।
বুধবার রাজধানী তেহরানের মন্ত্রিসভার সপ্তাহিক বৈঠকে দেয়া বক্তৃতায় ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমেরিকা কোনো অবস্থাতেই আর পরমাণু সমঝোতার অংশীদার নয় এবং তারা এই স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। পরমাণু সমঝোতার অন্য পক্ষগুলো এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতাকে তার দেশের জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট চুক্তি বলে ২০১৮ সালে সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যান এবং ইরানের বিরুদ্ধে একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দুই বছর পর ট্রাম্প প্রশাসন পরমাণু সমঝোতাকে ব্যবহার করে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং তারা দাবি করছে তারা এখনো সমঝোতার অংশীদার।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, পরমাণু সমঝোতায় টিকে থাকা এক বা একাধিক দেশ এই স্ন্যাপব্যাক ম্যাকানিজম ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যদি এই পথ এখন অনুস্মরণ করে তাহলে সারাবিশ্বে জানে তার পরিণতি কী হবে। তারা নিজেরা সেতু পুড়িয়ে দিয়ে কল্পনা করছে এখনো সেই সেতু ঠিক আছে এবং তারা তা পার হবে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের যেসব দেশ ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের শক্তভাবে রুখে দাঁড়ানো আহŸান জানান হাসান রুহানি। তিনি বলেন, ইরানের ভেতরে কেউ যদি মনে করে থাকেন হোয়াইট হাউজের এই বর্বর সরকার এবং এই নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞা চিরস্থায়ী তাহলে তারা ভুল করছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ভেস্তে যাবে এবং আমরা তা ধূলিস্মাৎ করে দেব। প্রতিরোধের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে দেবো যে, তারা ভুল করেছে এবং হোয়াইট হাউস ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে তারা ভুল করেছে।
স¤প্রতি ইরানবিরোধী অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব বাতিল করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। নিরাপত্তা পরিষদের বেশিরভাগ রাষ্ট্র ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সে কারণে, পরমাণু সমঝোতার ভিত্তিতে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ইরানের ওপর জাতিসংঘের আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। অক্টোবর থেকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে অস্ত্র বেচাকেনা করতে পারবে তেহরান।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও ওই সব নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলছেন ট্রাম্প।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সরাসরি জাতিংসংঘকে জানানোর জন্য নির্দেশ দিচ্ছি যে,ইরানের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে যত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রয়েছে সেগুলো আমরা আবার চালু করতে চাই।
স্ব.বা/বা