নাচোলে কাদের কেলেঙ্কারিতে নৌকা ডুবি !

রাজশাহী লীড

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সবগুলোতেই জামায়াত-বিএনপির কাছে নৌকার পরাজয় ঘটেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের কারণে নৌকার পরাজয় হয়েছে।

 

সারাদেশে যেখানে নৌকার জয়জয়কার সেখানে নাচোলে নৌকার স্মরণকালের সর্ববৃহত পরাজয় ঘটেছে, এমন নৌকা ডুবির ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারী নাচোল উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে (ইউপি) একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আব্দুল কাদেরের কারণে নির্বাচনে নেজামপুর ইউপিতে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী আমিনুল ইসলামের কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম, নাচোল ইউপিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শফিকুল ইসলামের কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাবুল হোসেন, কসবা ইউপিতে বিএনপি প্রার্থী জাকারিয়া ইসলামের কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজিজুর রহমান এবং ফতেহপুর ইউপিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাদির আহম্মেদ ভুলুর কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইসমাইল হোসেন অপু বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।

 

এসব নিয়ে আওয়ামী লীগের অন্দর মহলে নানা আলোচনা এবং কাদেরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ নৌকার এমন পরাজয়ের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

 

তারা বলছে, কাদেরের একাধিক নারী কেলেঙ্কারি, ক্ষমতার অপব্যবহার, খাসপুকুর ও গভীর নলকুপ অপারেটর বাণিজ্য ইত্যাদি ভোটের মাঠে প্রভাব পড়েছে। কাদের ইউপি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় নারী কেলেঙ্কারি করে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছে, এছাড়াও মনোরঞ্জনের জন্য ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় এক নারীকে বাসা ভাড়া করে রেখেছে।

 

নেতাকর্মীরা বলছে, প্রতিটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের অত্যন্ত সম্ভবনাময় গোছানো ভোটের মাঠ কাদের প্রচারণায় নামার পর তছনছ হয়েছে। ইউপি নির্বাচনে নৌকার এমন লজ্জাজনক পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাদেরের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

 

অন্যদিকে ৩ জানুয়ারী সোমবার আব্দুল কাদেরের ক্ষমতার অপব্যবহার, নারী কেলেঙ্কারি বিচার, দলীয় পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেফতার দাবি করে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিকেলে ডাকবাংলো চত্ত্বরে মানববন্ধন কর্মসুচি ঘোষণা করে। এদিকে এই মানববন্ধন কর্মসুচি পন্ড করতে কাদের তার অনুগতদের দিয়ে একই সময় ও স্থানে পাল্টা কর্মসুচি দেয়। এতে কর্মসুচি নিয়ে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে এতে মানববন্ধন কর্মসুচি পন্ড হয়ে যায়।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক প্রার্থী বলেন, কাদের ভাইকে অনুরোধ করা হয়েছিল তিনি যেনো কোনো ইউপিতে প্রচারণায় না নামেন। কিন্ত্ত তিনি তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে প্রচারণায নামায় আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেছে, কারণ তার একাধিক নারী কেলেঙ্কারি সাধারণ মানুষ মেনে নিতে পারেনি আওয়ামী লীগও বিব্রত।

 

এবিষয়ে জানতে চাইলে নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যাচার করছে।

 

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *