তানোরে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান কে নিয়ে সভা, তোলপাড় 

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ইউপির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু কে নিয়ে সভা করায়  আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফের তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। গত ২১ ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে  সভাটি অনুষ্ঠিত হয় । গত সোমবার বিকেলের দিকে গোল্লাপাড়া বাজারস্হ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত  সভায় ছিলেন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু । গত বুধবার ফেসবুকে দেখার পর উপজেলা জুড়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা, সেই সাথে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ। শুধু এখানেই শেষ না বিদ্রোহী নাজিম উদ্দীন বাবুর ভাগ্নে শরিফ উদ্দিন  শ্রদ্ধাঞ্জলির পোষ্টার ফেসবুকে পোস্ট করেন।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি দু ভাগে বিভক্ত। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে উভয় পক্ষের ছিল বিদ্রোহী প্রার্থী। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টির হয় দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন । ছয়টির মধ্যে চারটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা নির্বাচিত হন দুটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয় হন।দু জনই স্হানীয় সাংসদের আস্থা ভাজন।কলমা ইউপিতে চশমা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী এবং তালন্দ ইউপিতে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ইউপি সভাপতি নাজিম উদ্দীন বাবু।
ভোটের মাঠ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত নাজিম উদ্দীন বাবু সরাসরি বলছেন এমপির নির্দেশে ভোট করে নির্বাচিত হয়েছি। স্হানীয় সাংসদসহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুসারীরা পরিস্কার ভাবে বলে দিয়েছিলেন যারা নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে এবং মদদদাতারা দলের কোন পদে থাকবেনা।কিন্তু তালন্দ ইউপির চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু নির্বাচিত হয়ে প্রকাশ্যে দলীয় সভায় আসত না।কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারীর শ্রদ্ধাঞ্জলির পোষ্টার ফেসবুকে দেন নাজিমুদ্দিন বাবুর ভাগ্নে শরিফ উদ্দিন। সেই পোষ্টারের এক পাশে জাতির পিতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সজীব ওয়াজেদ জয়।অন্য পাশে স্হানীয় সাংসদ ফারুক চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নার ছবি এবং নিছে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবুর ছবি সংবলিত।
নাজিমুদ্দিন বাবু জানান, দল আমাকে বহিষ্কার করেনি।দলীয় সভায় যেতে সমস্যা কোথায়। আপনি ভোটের মাঠেও সাংসদের  নাম ব্যবহার করেছেন জানতে চাইলে তিনি  জানান, আমাকে না বললে কেন ভোট করব। আমি এমপির বাহিরে না। তার নির্দেশনায় ইউপির যাবতীয় উন্নয়ন করা হবে বলেও জানান এই বিদ্রোহী চেয়ারম্যান।
তালন্দ ইউপির নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী
সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম জানান, আমি এবং ইউপি সভাপতি নাজিম উদ্দীন বাবু ও ইউপি যুবলীগের সভাপতি রইশ উদ্দিন বাচ্চু একসাথে ঢাকায় যায়।আমাদের ওয়াদা ছিল নৌকা যিনি পাবেন তার হয়ে ভোট করা হবে। কিন্তু আমি নৌকা পেলাম বিদ্রোহী প্রার্থী হল বাবু ও বাচ্চু । ভোটের আগে মডেল পাইলট স্কুলে বর্ধিত সভায় আমি বলেছিলাম আমাদের দুই নেতা হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী। কিন্তু আমার কথা আমলে না নিয়ে উল্টো আমাকেই হেয় করা হয়েছিল। ভোটে পরাজিত হয়ে যে কষ্ট পেয়েছি, তার চেয়েই কষ্ট লেগেছে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু কে নিয়ে সভা করার দৃশ্য দেখে । যারাই বিদ্রোহীদের দলে কোন জায়গা নেই, তারা কখনো দলে আসতে পারবে না বলে পরিস্কার করে বলে দিল তাদের সাথেই বিদ্রোহী, কিছুই বলার নেই চোখ আছে দেখে যাও,কান আছে শুনে যাও।

তিনি আরো বলেন, সভায়  বিদ্রোহী চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু বসে আছে সামনের সারিতে। তাহলে আরেক জন সিনিয়র নেতা কলমা ইউপির চশমা প্রতীকের চেয়ারম্যান খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরীকে কাছে নেওয়া হল না কি কারনে। তিনি ২১ ফেব্রুয়ারী আলোচনা সভায় ফেসবুকে  দেখলাম পৌরসভার হলরুমে। কি হচ্ছে কি বলব।

স্ব.বা/ রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *