মুফতী শাহাদত আলীকে অপদস্থ করায় উলামা কল্যান পরিষদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

রাজশাহী

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: রাজশাহী সর্বজন শ্রদ্ধেয় বর্ষিয়ান আলেমেদ্বীন হযরত মুফতী শাহাদত আলীকে শাহমখদুম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অপদস্থ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে উলামা কল্যান পরিষদ রাজশাহী। আজ বুধবার বিকেলে উলামা কল্যান পরিষদ রাজশাহী আয়োজিত প্রতিবাদ সভা থেকে এই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রতিবাদ সভা শেষে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘গত ১০ জুলাই ২০২২ পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজের জামায়াত সকাল ৮:০০ টায় রাজশাহীর সর্ববৃহৎ জামাত শাহমখদুম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঈদের নামাজের ইমামতি করেন রাজশাহী সর্বজন শ্রদ্ধেয় বর্ষিয়ান আলেমেদ্বীন হযরত মুফতী মাওঃ শাহাদত আলী (হাফিজাহুল্লাহ) তিনি প্রায় ২৫ বছর যাবৎ এই ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজে ইমামতি করে আসছেন। এই ঈদগাহে রাজশাহীর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ ও সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করে থাকেন। যেহেতু জেলা প্রশাসক রাজশাহী এই ঈদগাহ ময়দানের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। সেহেতু ইমাম সাহেবকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জেলা প্রশাসক মহোদয় দিয়ে থাকেন। ঈদুল আযহার জামায়াত শুরু হবার পূর্বে নেতৃবৃন্দ কিছু দিক নির্দেশনা মূলক আলোচনা করে থাকেন। সেখানে কাউকে কোন কারণে কথা বলতে না দেয়ায় নামাজান্তে ক্ষোভের বহি:প্রকাশ হিসেবে ইমাম সাহেব হুজুরকে অপদস্থ করা হয়েছে মর্মে জানা যায়। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে নামাজান্তে খুৎবাহ পাঠের পর প্রচলিত নিয়মে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতের পর পারস্পরিক আলিঙ্গন ঈদ মোবারক জানানোর প্রথা দীর্ঘ দিন ধরেই চালু আছে। কিন্তু‘ সকল মুসল্লী যখন আলিঙ্গনে ব্যস্ত তখন রাজশাহীর একজন সাবেক মেয়র ও এম.পি তিনি ইমাম সাহেব হুজুরকে লক্ষ্য করে ধমকের স্বরে যেসব উক্তি করেছেন ইতোমধ্যে অনলাইন ও স্থানীয় পত্রিকায় সেই ভিডিও ক্লিপটি বেশ ভাইরাল হয়েছে।

সেখানে তিনি বলেছেন “দালালী ছেড়ে দেন, রসূলের কটুক্তির ব্যাপারে কথা বললেন না কেন? ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে”? তার এ ধরনের আচরণে রাজশাহীর সর্বস্তরের আলেম ওলামা ইমাম মুয়াজ্জিন খুবই কষ্ঠ পেয়েছেন। কারণ হলো- মহানবী (সঃ) বলেছেন“ ওলামায়ে কেরাম নবী রসূলদের উত্তরাধিকারী” ওলামায়ে কেরাম হচ্ছে জাতির জাগ্রত বিবেক। সকল মানুষের উপর তাদের সম্মান মর্যাদা। সুতরাং সাধারন মানুষের চেয়ে ওলামায়ে কেরাম আল্লাহকে বেশী ভয় করে এবং রসূল (সঃ) কে ভালোবাসেন। আলেমগণ সবসময় চেহারা সুরত পোষাক আশাক ও আখলাকে নবীজীর সুন্নতী তরিকায় অনুসরণ করে থাকেন। সুতরাং বলা যায় ঈদগাহ ময়দানে প্রশ্নকারীর চেয়ে ঈমাম সাহেব আল্লাহর রাসূল (সঃ) কে বেশী ভালবাসেন। নুপুর শর্মার নবীজীর ব্যাপারে কটুক্তি করা এবং কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সম্মানীত ইমাম সাহেবকে অপমান করা উভয় অপরাধ একই সমান বলে আমরা মনে করি। যিনি ইমাম সাহেবকে বলেছেন “ইমান নষ্ট হয়ে গেছে” তিনি কতটুকু ঈমানের অধিকারী নগরবাসীর নিকট তা পরিস্কার রয়েছে। তাদের জেনে রাখা উচিত ইমামগণ কোন দলের নয়, তারা কারও দালালী করেন না, তারা হলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। সুতরাং এ ধরনের দায়িত্বশীল ব্যক্তির নিকটে দায়িত্বহীণ আচরণ এবং একজন আলেমকে প্রকাশ্য ঈদগাহ ময়দানে অপমান করা চরম অন্যায় ও ঘৃণিত কাজ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং তাকে প্রকাশ্য ভূল স্বীকার করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজশাহীর সর্বস্তরের আলেম ওলামাগণ সম্বলিতভাবে আন্দোলন ও প্রতিবাদে নামতে বাধ্য হবে।

প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ওলামাগণ হলেন উলামা কল্যান পরিষদ রাজশাহীর উপদেষ্টা মুফতি মোঃ শাহাদত আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুফতি ইযাকুব আলী, উপদেষ্টা মাওলানা ড. বারকুল্লাহ বিন দূরুল হুদা, উপদেষ্টা এইচ.এম. শহীদুল ইসলাম, উপদেষ্টা মোঃ সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোঃ ওমর ফারুক, সাবেক সভাপতি মাওলানা মোঃ আইয়াব আলী, সহ-সভাপতি মাওলানা মোঃ মোকাদ্দাসুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাওলানা মোঃ আব্দুল কাদের, আইন ও বিচার বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহদাত হোসেন, প্রচার সম্পাদক হাফেজ মোঃ গোলাম নুহ, দপ্তর সম্পাদক হাফেজ মোঃ কামাল হোসাইন, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ মামুনুর রশীদ, মোঃ মজিবুর রহমান, মোঃ রফিউল ইসলাম রনি, ১৮নং ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ বেলাল হুসাইন, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মোঃ সোহেল, ২৫নং ওয়ার্ড সভাপতি মুফতি মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।

স্ব.বা/ রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *