স্বদেশ বাণী ডেস্ক : উড়োজাহাজে ভাড়ার ৪০ শতাংশ নির্ধারিত হয় জেট ফুয়েলের দামের ওপরে ভিত্তি করে। গত দেড় বছরে জেট ফুয়েলের দাম বেড়ে হয়েছে আকাশচুম্বী। এতে আকাশপথে বেড়েছে খরচ, কমে গেছে যাত্রীসংখ্যা।
দুই বছর আগেও প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ছিল ৪৬ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে লিটারপ্রতি জেট ফুয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। গত ২০ মাসে জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে ১৮৩ শতাংশ। জেট ফুয়েলের এমন উচ্চমূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বাড়িয়েছে বিমান ভাড়া। ভাড়া বাড়ায় আকাশপথে কমে এসেছে যাত্রীসংখ্যা। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বিমান সংস্থাগুলো।
ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, দুই বছর আগে অভ্যন্তরীণ যে রুটের সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল দুই থেকে আড়াই হাজার, একই রুটে বর্তমানে ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজারে।
বিমানসংস্থাগুলো কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, সৈয়দপুর, রাজশাহীতে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে। জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায় এসব রুটের ভাড়াও বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। ধারণা করা হচ্ছে, এভাবে ভাড়া বাড়তে থাকলে যাত্রীভাবে দেশের পর্যটনখাত ক্ষতির সম্মুখীন হবে, লোকসান গুনতে হবে বিমান সংস্থাগুলোর।
পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, যখন প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ৪৬ টাকা ছিল তখন ঢাকা-যশোর রুটের সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল দুই হাজার ৭০০ টাকা। সেটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৮০০ টাকায়। একইভাবে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল তিন হাজার ৭০০ যা এখন পাঁচ হাজার ৮০০ টাকা। দুই হাজার ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ঢাকা-সৈয়দপুরের ভাড়া এখন চার হাজার ৮০০ টাকা। চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীর ভাড়া হয়েছে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। করোনার আগে যা ছিল দুই হাজার ৭০০ টাকা।
জেট ফুয়েলের দামের ওপরই ফ্লাইট ভাড়াসহ উড়োজাহাজ পরিচালনার সবকিছু নির্ভর করে বলে জানান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাপরিচালক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার। ধারণা করা হচ্ছে নতুন করে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায়, ফ্লাইট ভাড়া আরও বাড়বে। এতে করে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীসংখ্যা আরও কমে আসবে।
জেট ফুয়েলের দাম নিয়ন্ত্রণে ভর্তুকি চাচ্ছে বিমান সংস্থাগুলো। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সাফ জানিয়ে দিয়েছে জেট ফুয়েলে কোনো ধরনের ভর্তুকি দেয়া হবে না এ ব্যাপারে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, অকটেন এবং ডিজেল দেশের সব শ্রেণির যানবাহনে ব্যবহার হয়। বছরে ৫০ থেকে ৬০ লাখ মেট্রিক টন চাহিদা রয়েছে। আর জেট ফুয়েলের চাহিদা মাত্র দুই থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন। তাই জেট ফুয়েলে ভর্তুকি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায় উড়োজাহাজের ভাড়া বেড়ে গেছে। কিন্তু উড়োজাহাজে যারা যাতায়াত করেন তাদের প্রায় সবাই সমাজের সামর্থ্যবান। সমাজের উচ্চবিত্তদের জন্য ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন আজাদ।<স্ব.বা/ম