বাঘা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় নৌকা বাইচ দেখতে শুক্রবার(২১ অক্টোবর) দুপুর থেকেই পদ্মার পাড়ে জমায়েত হোন হাজারো জনতা। সকল ধর্মের নারী পুরুষের সমাগমে মহামিলনে পরিণত হয় নৌকা বাইচের এ মেলা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল উৎসবের আমেজ। বাঘা উপজেলার বেংগাড়ী এলাকার পদ্মা নদীর পাড়ে নৌকা বাইচের এ মেলার আয়োজন করা হয়।
তিনদিন ব্যাপি ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ মেলা উপলক্ষে সংশ্লিষ্ঠ এলাকার বাড়িতে বাড়িতে ছিল আত্মীয় স্বজনদের ভিড়। উপজেলার মর্শিদপুর থেকে চানপুর বাজার পর্যন্ত ছোট বড় মিলে প্রায় ৫০০ শত দোকানী তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছিল বিকিকিনি করার জন্য।
‘নাও ছাড়িয়া দে, পাল উড়াইয়া দে’ এই সব গানের সুর তালে নৌকার মাঝি তার দলবল নিয়ে পদ্মা নদীতে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছিল নৌকা বাইচে। নানান রঙে নৌকা সাজিয়ে প্রতিযোগী নৌকার মাঝি- মাল্লারাও সাজেন বর্ণিল সাজে। করতাল, খোল, কাশি, বাঁশি ও ঢোঁল সহ নানান বাদ্য যন্ত্র নিয়ে প্রতিযোগীতায় নামেন তারা। বিশেষ ভঙ্গিতে গান গেয়ে লোকজ সংস্কৃতিকে জাগিয়ে তোলেন প্রতিযোগী নৌকার গায়ক দল । বিজয়ী হতে শ্রষ্টাকে স্মরন করে নৌকার মাঝের অংশে অবস্থান নিয়ে মাল্লারা বৈঠা নিয়ে তালে তালে নৌকাকে এগিয়ে নেন। পিছনে হাল ধরে থাকেন মাঝি। করতালি, হর্ষ ধ্বনি, নৌকা বাইচের লোকজ গান, বাদ্য-বাজনায় মুখরিত হয়ে উঠে নদী পাড় এলাকা। দর্শক ও সমর্থকরা উৎসাহ দিতে নানা ধরনের নৌকা সাজিয়ে মাইক বেঁধে অবস্থান নেন নদীর তীরে।
শুক্রবার(২১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় মেলার দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহীর চারঘাট-বাঘার সংসদ সদস্য,পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম। এসময় প্রতিমন্ত্রী সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য দেন। গড়গড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভ’মি) জুয়েল আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, আড়ানি পৌর মেয়র মুক্তার হোসেন,আ’লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম মন্টু,অধ্যক্ষ নছিম উদ্দীন, ওয়াহিদ সাদিক কবীর, মাসুদ রানা তিলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহমানসহ আয়োজক কমিটির সদস্যগন।
সরেজমিন দেখা যায়, শুক্রবার দুপুর থেকেই পদ্মা নদীর দুই তীরে ভিড় জমেছিল উৎসুক জনতার। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল উৎসবের আমেজ।
আয়োজক কমিটির সভাপতি,চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসী নৌকা বাইচকে পূর্ব ঐতিহ্য মনে করেন। প্রায় শত বছর ধরে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় এ বছরও নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে । প্রতিদিন বিজয়ীদের মধ্যে পুরুস্কার বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। দ্বিতীয় দিন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম দলকে ৫০ হাজার ও দ্বিতীয় বিজয়ী দলকে নগদ টাকা ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ¦ শাহরিয়ার আলম। প্রথম দিনের বিজয়ী প্রথম দলকে ২৮ ইঞ্চি রঙিন এলিডি ও দ্বিতীয় বিজয়ী দলকে ২৪ ইঞ্চি রঙিন এলিডি টেলিভিশন দেওয়া হয়েছে।
স্ব.বা/বা