ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতে পোল্ট্রি  খামার, দূষণ হচ্ছে পরিবেশ!

রাজশাহী লীড
আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর: পোল্ট্রি খামারের বিষ্টাসহ অন্যান্য বর্জ উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখায় সৃষ্টি হয়েছে  তীব্র দুর্গন্ধ। এই দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে খামারের আশপাশের বসবাসকারী, পথচারী ও বাজার এলাকার মানুষের জীবন। নীতিমালা উপেক্ষা করে পরিবেশ দূষণের এমন ঘটনা নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার তামালতলা মোড় বাজার এলাকায়। খামার মালিক উপজেলার নূরপুর চকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মানিক আলী।
বাধ্য হয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয়রা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিকে প্রকাশ্য এমন পরিবেশ দূষণের অভিযোগ করে বিপাকে রয়েছে স্থানীয় অভিযোগকারী। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছেন দ্রুতই আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সজেমিনে দেখা যায়, উপজেলার তমালতলা মোড় বাজারের পশ্চিম দিকে পাকা রাস্তার পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে টিনসেড মুরগীর বড় একটি খামার। ঘনবসতিপূর্ণ ও বাজার এলাকায় স্থাপন করা খামারটি পাশেই রয়েছে মসজিদ ও স্কুল। খামারের উত্তর-দক্ষিণ পাশের পাকা সড়ক দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও মসজিদের মুসল্লী ছাড়াও  প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করেন। খামারটির পাশেই আছে বেশ কিছু খাবারের দোকান সেখানে সকাল থেকে রাত অবদি মানুষের আনাগোনা থাকে।
খামার এলাকায় বসবাসকারী স্থায়ী বাসিন্দা শিক্ষক তয়েজ মাহমুদ বলেন, দুর্গন্ধ এতো তীব্র হয় যে, বাড়ীতে বাস করা কঠিন হয়ে যায়। তেমনি খাবার খেতেও অরুচি আসে। আর মানুষ সহ পশু-প্রাণীর বিভিন্ন রোগ সারাবছর লেগেই থাকে। ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে এমন খামার থাকায় সকলেই খুব কষ্টে বসবাস করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, মুরগীর বিষ্টার দূর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। খামার এলাকার বিভিন্ন মানুষের গায়ে দেখা দিয়েছে চর্ম রোগ। পরিবেশ দূষণের বিষয়ে খামার মালিককে বলা হলেও তিনি আমলে নেয়না। বরং যিনি বলতে যান, তার সাথেই অসধাচরণ করেন। তাই বাধ্য হয়ে সম্প্রতি স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারীর দাবি, পরিবেশ দুষণ রোধে অভিযোগ করে তিনি যেন, মহা অপরাধ করেছেন। একদিকে অভিযুক্ত খামার মালিক নানান কথা বলছেন, আবার অভিযোগ তদন্তকারী বলছেন, কেন অভিযোগ করলেন? তিনি কি এখন খামার বন্ধ করেদেবেন।bতবে এসকল বিষয়ে খামার মালিক কোন মন্তব্য করতে চাননি। স্থানীয় চিকিৎসক বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে খামার এলাকার মানুষের স্কীন ডিজিজ, ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন ধরণের রোগের সৃষ্টি হবে।
খামার এলাকার মানুষের কোন স্বাস্থ্য ঝুকি আছে কিনা? এমন প্রশ্নে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মুরগীর খামার করা উচিত নয়। মুরগীর বিষ্টার কারণে পানি ও পরিবেশ মাত্মকভাবে দূষিত হয়, এটি পরিবেশের জন্য হুমকি। এর কারণেই মানুষের শরীরে চর্মরোগ ও ডায়রিয়া সহ নানাবিধ অসুখ দেখা দেয়।
বাণিজ্যিক মুরগীর খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোতি এবং জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নে অভিযোগ তদন্তকারী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আবু জাফর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন দাবি করে বলেন, আমি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী বরাবর দিয়েছি, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সুরাইয়া মমতাজ বলেন, পরিবেশ দূষণ করাটা অপরাধ। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্ব.বা/বা
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *