তানোরে খাস জায়গায় মটর পাম্প স্থাপন করে চলছে রমরমা সেচ বাণিজ্য

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের যোগসাজশে সরকারি খাস জায়গা দখল করে সেচ মটর পাম্প স্থাপন করে চলছে রমরমা সেচ বানিজ্য। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার প্রকাশনগর গ্রামে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকাশনগর গ্রামের আমজাদ আলীর পুত্র আসলাম আলী রাসেল সরকারি খাস জায়গা দখল করে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের যোগসাজশে অবৈধ ভাবে ৩টি মটর পাম্প স্থাপন করে কৃষকদের জিম্মি করে করছেন রমরমা সেচ বানিজ্য। জানা গেছে, প্রকাশনগর মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ১৫৭ দাগে অবৈধ ৩টি মটর পাম্প স্থাপন করে চালাচ্ছেন এমন সেচ বানিজ্য। এতে করে একজন বিএনপির সক্রিয় নেতা আসলাম আলী রাসেল আওয়ামী লীগের আমলে খোলস পাল্টিয়ে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানীর ছত্রছায়ায় থেকে এমন অবৈধ সেচ বানিজ্যের ঘটনায় এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা ও উঠেছে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দাবি। প্রকাশনগর গ্রামের কৃষক রয়েল ইসলাম বলেন, আসলাম আলী রাসেল দীর্ঘদিন ধরে খাস জায়গায় অবৈধ মটর পাম্প স্থাপন করে রীতিমতো কৃষকদের জিম্মি করে সরকার নির্ধারিত সেচ হারের থেকে তিনগুণ বেশি হার নিয়ে জমিতে সেচ দেন। এমনকি মটর পাম্পের কোন সমস্যা হলে কৃষকদের কাছে থেকে ৩শ থেকে ৫শ করে টাকা তুলে মটর পাম্প ঠিক করেন। কেউ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে সময়মতো দেয়া হয়না সেচ। যার জন্য বাধ্য হয়ে আসলাম আলী রাসেলের কথা মতো চলছে হয় কৃষকদের। আসলাম আলী রাসেলের এমন অত্যাচার দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অথচ দেখার যেন কেউ নেই। এমনকি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে একাধিকবার অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি কৃষকরা।
অবৈধ মটর পাম্প মালিক আসলাম আলী রাসেলের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংযোগ দিয়েছে বলেই তো মটর পাম্প দিয়ে সেচ দিচ্ছি, মটর পাম্প বৈধ না অবৈধ সেটা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস আর আমি বুঝবো,আপনারা সাংবাদিক নিউজ করেন বেশি বেশি করে। আমিও দেখবো আমার মটর পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ কে কাটতে আসে বলে তিনি দম্ভোক্তি দেখান। তানোর পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা জিএম জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ছটাক জমি অনাবাদি থাকবেনা, সেই জন্য এসব সেচ মটর পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। এতে করে কে অনুমতি পেলো আর না পেলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় না, যাই মটর পাম্পে সংযোগ চাইবে আমরা তাঁকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে প্রস্তুত আছি। এতে কার কি সমস্যা হলো সেটা আমাদের দেখার সময় নেই বলে দম্ভোক্তি দেখান তিনি। তানোর বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, বর্তমনে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস যেভাবে যত্রতত্র সেচ মটর পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে শুরু করেছে তাতে বরেন্দ্র বহুমুখী ডিপের পানি তোলা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এভাবে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস অবৈধ মটর পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে থাকে তাহলে আগামীতে পানির লেয়ার অনেক নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এখনো যদি অবৈধ মটর পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ না করা হয় তাহলে বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির তীব্র সংকট দেখা দিবে বলে জানান তিনি।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *