বৃহস্পতিবার রাতে কার্যকর হচ্ছে ড. তাহের হত্যার দুই আসামির ফাঁসি

বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত ১০টা ১ মিনিটে। বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী কারাগারে এক সঙ্গে দুইজনেরই ফাঁসি কার্যকর করা হবে বলেও কারা সূত্র বলছে।

 

কারা সূত্রমতে, গত মঙ্গলবার দুই আসামির পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাত করেন। এর মাধ্যমে দুই আসামীর ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দুই আসামীর ফাঁসি কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আটজন জল্লাদকে। কয়েক দফায় তারা ফাঁসি কার্যকর করার মহড়া দিয়েছে।

বুধবার ফাঁসির আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিয়ে আসামীদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে ডেকেছিলেন। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে আমাদের পরিবারের ৩৫ জন সদস্য জাহাঙ্গীরের সঙ্গে শেষ দেখা করেছে। আর আগে সকালে ড. মিয়া মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা শেষবারের মতো দেখা করেছেন বলে শুনেছি।

জানা গেছে, অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি, ডিআইজি প্রিজন ও কারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বৈঠক করেছে। তবে এ নিয়ে কোনও বক্তব্য দেননি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। অত্যান্ত গোপনিয়তা রক্ষা করে ফাঁসির প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করছে তারা।

 

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক এস তাহের আহমেদের গলিত মরদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলমসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে।

২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। দ-িতরা হলেন- বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালাম। তবে বিচারে খালাস পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিন মুন্সি।

 

পরবর্তী দন্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন। তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দন্ডবৃদ্ধি চেয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন।

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *