আফ্রিকা থেকে স্পেন অভিমুখী নৌকা ডুবে ৬০ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: আফ্রিকা থেকে স্পেন অভিমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

নৌকাটি ১০১ যাত্রী নিয়ে গত ১০ জুলাই যাত্রা শুরু করে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।

আফ্রিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূলে দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্দের উপকূলে বিশেষ ওই নৌকাটি ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া নৌকায় থাকা অভিবাসীদের বেশিরভাগই সেনেগালের নাগরিক বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম আফ্রিকার কেপ ভার্দে উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শিশুসহ আরও ৩৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সেনেগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই নৌকাটি ১০১ জন যাত্রী নিয়ে গত ১০ জুলাই দেশ ছেড়েছিল। মন্ত্রণালয় বলেছে, বেঁচে যাওয়া অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনের জন্য কেপ ভার্দে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে তারা। যাত্রীদের গন্তব্য ছিল স্পেনের কানারি দ্বীপে। সেখান থেকে তারা গোটা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

উদ্ধারকৃত এসব মানুষকে সাল দ্বীপের উপকূলে পৌঁছাতে সাহায্য করা হচ্ছে বলে ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে আবার কিছু মানুষকে স্ট্রেচারে করেও উপকূলে নিতে দেখা যায়। দুর্ঘটনাকবলিত নৌকাটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সমুদ্রে ছিল এবং নৌকাটিতে থাকা প্রায় সবাই সেনেগাল থেকে এসেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে আরও প্রাণহানি রোধে অভিবাসনের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কেপ ভার্দের কর্মকর্তারা। পুলিশ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, গত সোমবার এ নৌকাটিকে প্রথম দেখা যায়। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, নৌকাটি ডুবে গিয়েছিল। কিন্তু পরে স্পষ্ট করা হয় যে, এটিকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে।

বিবিসি বলছে, কাঠের পিরোগ স্টাইলের এই নৌকাটিকে কেপ ভার্দের সাল দ্বীপ থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে দেখতে পায় স্পেনের একটি মাছ ধরার নৌকা। এর পরই তারা এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জীবিতদের মধ্যে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সি চার শিশু-কিশোর রয়েছে বলে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। নৌকার বেশিরভাগ যাত্রী সেনেগালের হলেও তাতে সিয়েরা লিওন এবং গিনি-বিসাউয়ের মতো অন্য দেশগুলোর অভিবাসীও আরোহী হিসেবে ছিল বলে জানা গেছে।

সাল দ্বীপের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জোসে মোরেরা বলেছেন, জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে এবং তাদের যত্ন নেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিলোমেনা গনকালভস বলেছেন, ‘আমরা জানি অভিবাসনের এই সমস্যাগুলো বৈশ্বিক সমস্যা। এর জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, প্রচুর আলোচনা এবং বৈশ্বিক কৌশল প্রয়োজন। আমাদের সবাইকে – সব দেশকে-টেবিলে বসতে হবে এবং সমুদ্রে যেন আর প্রাণ হারাতে না হয় সে বিষয়ে আমরা কী করতে পারি তা দেখতে হবে।’

এর আগে গত জুলাইয়ের শেষের দিকে সেনেগালের রাজধানী ডাকার উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। পশ্চিম আফ্রিকার কেপ ভার্দে হয়ে স্পেনে যাওয়ার এই রুটে গত বছর নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৫৯ জন। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মৃত্যু হয়েছে ১২৬ অভিবাসনপ্রত্যাশীর। এমনটি জানিয়েছে আইওএম।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *