বাঘায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একজন নিহত আরেকজন আহত

রাজশাহী লীড

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় মেহেদি হাসান লিখন (২৬) নামের একজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ও শামীম হোসেন((২৪) নামের অপরজনকে আহত করেছে প্রতিপক্ষরা। মঙ্গলবার(১৪-১১-২০২৩) সকাল ১২ টায় উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মেহেদি হাসান লিখন ওই গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে ও আহত শামীম হোসেন একই গ্রামের আফছার আলীর ছেলে। মেহেদী হাসান ৫ বছর ধরে পাবনা স্কয়ার কোম্পানীতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তার চাকুরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর ক্যানেলে মাছ চাষের ঘটনা নিয়ে,ওইদিন রাস্তায় যাওয়ার সময় মেহেদি হাসান লিখন (২৬) ও শামীম হোসেন(২৪) এর সাথে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, গ্রামের বাচ্চু মন্ডলের ছেলে নাফিজ হোসেন(২৫)। একপর্যায়ে নাফিজ হোসেন তার বাবাকে ডেকে নেয়। পরে তার বাবা বাচ্চু মন্ডলের কাছে থাকা খেজুর গাছের রস নামানোর কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র (বাটাল) দিয়ে মেহেদি হাসান লিখনের শরীরের ডান পায়ের হাটুর উপরে কুপিয়ে রক্তাত্ত জখম করে। তাকে রক্ষা করতে গেলে শামীম হোসেনকেও কুপিয়ে আহত করা হয় । ঘটনা জানার পর স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে দৌড়ে গিয়ে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

পরে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসক হাসিবুল হাসান তাকে মৃত ঘোষনা করেন। হাসপাতালের সামনে আহাজারি করেন নিহতের পরিবার।

শামীম হোসেন জানান, কয়েকজন বন্ধু মিলে পদ্মা নদীর ক্যানেলে মাছ চাষ করেছেন। তারা দুইজন নদীর ক্যানেল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাফিজ হোসেন পথরোধ করে মাছ ছাড়ার জায়গাটি তার বলে দাবি করে। তাকে টাকা দিয়ে অংশ নিতে বলা হয়। এ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে কুপিয়ে জখম করে।

নিহতের পরিবার ও আহত শামীম হোসেনের মা সাবিনা বেগম জানান,গ্রামের কয়েকজন ছেলে মিলে মাছ ছেড়েছে। তাদের একজন পার্টনার মেহেদি হাসান লিখন। স্থানীয় সূত্র বলছে, মেহেদি হাসানসহ কয়েকজন অনেক আগে থেকেই ক্যানেলে মাছ চাষ করছেন।

নিহতের মা হাসিনা বেগম ভ’মিহীন। আত্নীয়র জায়গায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, মেহেদি হাসান ৫ বছর ধরে পাবনা স্কয়ার কোম্পানীতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। ৩দিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছে। মঙ্গলবার বিকেলে তার চাকুরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের মোল্লা জানান,নিহতের পরিবারের কোন জায়গা জমি নাই। আত্নীয় জায়গায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

বাঘা থানার ওসি(তদন্ত) সবুজ রানা বলেন, সুরতহালে নিহতের ডান পায়ের হাটুর ওপরে কাটা জখম পাওয়া যায়। আঘাতজনিত কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পারিবারিক কোন বিষয় আছে কিনা,সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হবে।

মাছ ছাড়ার জায়গাটি উন্মুক্ত জলাশয় কিনা-জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহি অফিসার শারমিন আখতার বলেন,সরেজমিন তদন্ত না করে মন্তব্য করা যাচ্ছেনা।
ঘটনার পর থেকে এলাকা ছাড়া হত্যাকারিরা। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *