বুশরার সঙ্গে ধানমন্ডি-ঢাবি ঘুরে রামপুরা থেকে নিখোঁজ হন ফারদিন

জাতীয় রাজনীতি

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বান্ধবী বুশরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত ফারদিনের বাবা বলছেন, গত ৪ নভেম্বর বাসা থেকে বের হওয়ার পর ওইদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ফারদিন আমাতুল্লাহ বুশরার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন।

প্রথমে তারা দুজন সিটি কলেজ এলাকায় মিলিত হন। পরে রাজধানীর নীলক্ষেত ও ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে বেড়ান। বিকেল ৫টার দিকে ‘ইয়াম চা ডিস্ট্রিক্ট’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস এলাকায় ঘুরেছেন তারা। পরে রাত ১০টার দিকে ফারদিন পরশ ও আয়াতুল্লাহ বুশরা রিকশায় রামপুরা টিভি ভবন এলাকায় আসেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ।

রামপুরা থানায় নিহত ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগ

এজাহারে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা উল্লেখ করেছেন, গত ৪ নভেম্বর দুপুর ৩টার দিকে ফারদিন বুয়েটের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। পরদিন ৫ নভেম্বর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরে মায়ের হাতে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা ছিল তার। পরে জানতে পারি আমার ছেলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি ও তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এজাহারে নূর উদ্দিন আরও বলেন, বুয়েটের শিক্ষক ও ফারদিনের সহপাঠীরা ফারদিনের মোবাইলফোনে বারবার চেষ্টা করেও সংযোগ পায়নি। সবাই তার মোবাইলফোন বন্ধ পায়।

তিনি আরও বলেন, ফারদিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এই বিষয়টা আমি জানতে পারি ৫ নভেম্বর বিকেল পাঁচটার দিকে। তখন আমি তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে বন্ধ পাই। এরপর ফারদিনের সহপাঠী বন্ধু-বান্ধব সবাই মিলেও কোনো সন্ধান পায়নি।

এমতাবস্থায় ৫ নভেম্বর আমার নিখোঁজ ছেলের বিষয়ে রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।

নূর উদ্দিন এজাহারে বলেন, সাধারণ ডায়েরির পরিপ্রেক্ষিতে রামপুরা থানার ওসি ও থানার ফোর্সদের চুলছেঁড়া জেরার মুখে আয়াতুল্লাহ বুশরা জানান, ফারদিন পরশ গত ৪ নভেম্বর বাসা থেকে বের হওয়ার পর ওইদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বুশরার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন

তিনি আরও বলেন, তিনদিন ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর গত ৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার সময় জানতে পারি, আমার ছেলের মরদেহ নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নৌ পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ছেলে ফারদিনের মরদেহ শনাক্ত করি।

ফারদিনের বাবার ধারণা, তার ছেলেকে ৪ নভেম্বর রাত ১০টার পর থেকে ৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে যে কোনো সময় রামপুরায় অথবা অন্য কোথাও হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

ফারদিন নিখোঁজ ও মৃত্যুতে বুশরার ইন্ধন আছে বলেও উল্লেখ করেন ফারদিনের বাবা।

তিনি মনে করেন, বর্তমান সময়ে ঘটনাটি জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার ও দোষীদের শাস্তি হবে।

এদিকে ফারদিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় তার বান্ধবী বুশরার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে রামপুরা থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

এর আগে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *