বাঘায় পেঁয়াজ আবাদে স্বপ্ন দেখছেন কৃষক, বাজারে দাম কমবে বলে আশা ক্রেতাদের

কৃষি

আব্দুর হামিদ মিঞা,বাঘা (রাজশাহী): দামে ও ফলনে কৃষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজ। মুড়ি ও চারা পেঁয়াজের তুলনায় গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজের আবাদে ফলন বেশি হওয়ায় এমন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। আর কয়েক দিনের মধ্যে মাঠ থেকে বাজারে উঠবে গ্রীস্মকালিন এই পেঁয়াজ। বাড়তি যোগান দিতে,বাজারে পেঁয়াজের আমদানি হলে দাম আরো কমবে বলে আশা ক্রেতা সাধারনের।

কৃষকরা বলছেন, খরচের তুলনায় বাজার দর ভালো না পেলে লোকসান গুনতে হবে তাদের। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা আর ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে।

খানপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে, ৭ বিঘা জমিতে আগাম গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজ চাষ করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে জমি থেকে পেঁয়াজ উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। ভালো দাম পেলে লাভ হবে বলে আশা তার। উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে প্রণোদনার সার-বীজ ও নেট-দড়ি দিয়ে সহায়তা করেছে বলে জানান।

লীজ,সেচ,পরিচর্যা সহ বিভিন্ন খাত মিলে তার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমি লীজ নিয়েছেন ১০ হাজার টাকায়। আব্দুস সালাম জানান,গত বছর গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজ আবাদ করে,১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন করেছিলেন ১৭৪ মণ। এবার বর্ষনের কারণে চারা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এবার ফলন কম হবে।
মঙ্গলবার (১৪-১১-২০২৩) উপজেলার পদ্মার চরে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুস সালামের মতো অনেকেই গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। কালিদাশখালি গ্রামের জগলু শিকদার বলেন, সরকারি সুবিধা পেয়ে লাভের আশায় অনেক কৃষক গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজের চাষ করেছেন। চরের পেঁয়াজের গুণগতমান ভালো হয়। তবে পরিচর্যা খরচ বেশি পড়ে। রবি মৌসুমে পেঁয়াজের জমিতে সাথী ফসল হিসেবে অন্য ফসলের আবাদ করা যায়।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবছর গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৩০ হেক্টর জমিতে। ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে এই পেঁয়াজ তুলে বাজারজাত করা যায়। গত বছর রবি শষ্য মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রার চাইতে বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছিল বাঘা উপজেলায়। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ২০ হেক্টর । চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে। বেশি চাষ হয়েছিল পদ্মার চরঞ্চলে। এ বছরও বেশি জমিতে বেশি পেঁয়াজ আবাদের আশা করছেন কৃষি দপ্তর।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন,উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শসহ প্রণোদনার সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। মুড়ি ও চারা পেঁয়াজের তুলনায় গ্রীস্মকালিন পেঁয়াজের ফলনও বেশি হয়। চারা রোপনের পর থেকে ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে বাজারজাত করা যায় । এ বছর রবি শষ্য মৌসুমে মুড়ি ও চারা পেঁয়াজের আবাদ গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে জানান এই কৃষি অফিসার ।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *