সারোয়ার হোসেন,তানোর(রাজশাহী): উত্তরবঙ্গের মধ্যে ধান চাষের জন্যে প্রত্যন্ত অঞ্চল হিসেবে ধরা হয় রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলাকে। এ উপজেলায় যেমন ধান চাষ হয় তেমন পাশাপাশি আলুও চাষ হয়। এছাড়াও বিভিন্ন চৈতালী সাথী ফসলও উৎপাদন হয় বাম্পার। তবে ধানের চাষ হয় একটু বেশি। বিশেষ করে বোরো ধান চাষ হয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি। তানোরে বোরো চাষের সময়টা শীতকালীন হওয়ায় হাড় কাঁপানো কনকনে শীতকে তোয়াক্কা করে বোরো চাষ করতে চরম কষ্ট পোহাতে হয় বোরো চাষিদের। পাখি ডাকা ভোর থেকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল পর্যন্ত গরুর লাঙ্গল ও ট্রাক্টর দিয়ে বোরো জমি রোপণের জন্যে হাল চাষ করা হয়। ভোর থেকে শীতল ঠান্ডা পানিতে নেমে বোরো ধানের বীজ তুলে সেই বীজ জমিতে রোপণ করেন শ্রমিকরা। তার পরে দীর্ঘ ৩/৪মাস রোপণ কৃত বীজের পরিচর্যা করে বড় করে তোলা হয় বোরো ধান।
বর্তমানে তানোর উপজেলার যেদিকে তাকাই সেদিকেই বোরো ধানের সবুজ পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। উপজেলার বিভিন্ন বোরো জমির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের কষ্টে অর্জিত বোরো ধানের সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে প্রতিটি বোরো ধানের মাঠ। আর অল্প সময়ের মধ্যে শুরু হবে বোরো ধানের শীষ বের হওয়া।
তানোর পৌর এলাকার ধানতৈর গ্রামের কৃষক নিশান মোল্লা জানান, তিনি ৯বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন,ধানের পাতাও সুন্দর ভাবে বের হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে সপ্তাহ তিন চারেকের মধ্যে ধানের শীষও বের হওয়া শুরু করবে। অন্য বছরের তুলনায় এবছর বোরো ধান চাষের খরচ অনেক বেশি হয়েছে। বিশেষ করে এবছর প্রচন্ড ঠান্ডার জন্য বোরো জমি রোপণ করতে শ্রমিকের মজুরি বেশি দিতে হয়েছে। একেক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে খরচ পড়েছে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ধানের পরিচর্যা খরচ তো আছেই। তার পরেও আশা করা যাচ্ছে এবছর বোরো ধানের ভালো ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার সব হিসেব করে ২৫ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এতে বোরো ধানের ফলন হবে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৯০০ মেঃ টন। যা উপজেলার জনসাধারণের চাহিদার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান,এবছর বোরো ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সাথে ধানের দামও ভালো পাবেন কৃষকরা। হেক্টর প্রতি ৭মেঃ টন করে ফলন ধরা হয়েছে।