স্বদেশবাণী ডেস্ক: প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গড়েছে ৪০৯ রানের পাহাড়। মিরপুরের তথাকথিত স্পিনবান্ধব উইকেটে নাকানিচুবানি খেয়েছেন তাইজুল-মিরাজরা। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তা দেখে মনে হয়েছে এ যেন ব্যাটিং স্বর্গ।
আর সেই ব্যাটিং স্বর্গই বাংলাদেশের ইনিংসে বোলারবান্ধব হয়ে গেল। শুধু স্পিনেই নয়; টাইগাররা ধরাশায়ী হয়েছেন ক্যারিবীয় পেসার গ্যাব্রিয়েল ও জোসেফের বলে।
ক্যারিবীয় বোলারদের বলে কী এতই ধার ছিল?
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেশিরভাগই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন।
তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মি. ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম।
তৃতীয় দিন শেষে মুশফিকের আউট নিয়েই ক্ষোভ দেখা গেছে টাইগার সমর্থকদের মধ্যে। অনেকের মতে, আত্মহত্যা করে ফিরেছেন মুশফিক।
মুশফিককে নিয়ে এমন মন্তব্যই স্বাভাবিক। ৪০৯ রানের পাহাড়কে সামনে রেখে মুশফিকের রিভার্স সুইপ খেলে আউট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো নয় অবশ্যই। চাপের মধ্যে থেকে টেস্ট ফরম্যাটে অমন রিভার্স সুইপ নেহায়েত অপ্রয়োজনীয়। এটি ক্রিকেটীয় ব্যাকরণের সঙ্গে বেমানান।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ক্যারিবীয়দের লিড ২১১ রানের। এই লিডটা আরও অনেক কম হতে পারত।
কিন্তু একটি রিভার্স সুইপই সব এলোমেলো করে দিয়েছে। না হয় বাংলাদেশ হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের খুব কাছে থেকেই তৃতীয় দিন শেষ করতে পারত।
মুশফিক যখন ওই বেখেয়ালি শটটি খেলে আউট হন দল তখন ফলোঅন এড়াতে প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মুশফিকই সেই লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন।
এর আগে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তামিমের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪৪ রান ছাড়া আর কেই দাঁড়াতে পারেননি। সবার ভরসার পাত্র ছিলেন মুশফিকই। ১০৫ বলে ৫৪ রান করে ওয়েল সেট ছিলেন মুশফিক।
আর এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে হঠাৎ কর্নওয়ালের স্পিনে অবিবেচকের মতো রিভার্স সুইপ খেলেন মুশফিক। কভারে ধরা পড়েন মায়ার্সের হাতে। এ আত্মহত্যা নয় তো কী!
ফলোঅন এড়াতে ৪৩ রান তখনও বাকি। লক্ষ্য ছিল কেবল কোনো উইকেট না হারিয়ে ফলোঅন এড়ানো। অর্থাৎ ম্যাচের কন্ডিশনের সঙ্গে ওই শটের কোনোই সংযোগ ছিল না।
সবার মুখে একটাই প্রশ্ন, ওই রকম পরিস্থিতিতে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা উইলোবাজকে কেন অমন সুইপ শট খেলতে হবে?
তিনি ভুলটি না করলে হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড একশর নিচে নামিয়ে আনা যেত।
শনিবার শেষ বিকালে ক্যারিবীয়দের ৩ উইকেট নেওয়ার খুশিকে ছাপিয়ে মুশফিকের সেই রিভার্স সুইপের আউটটাই আফসোস হয়ে থাকল।