স্বদেশ বাণী ডেস্ক:নাটোরের লালপুর উপজেলায় বৃষ্টির অভাবে রোপা আমনের চাষ ব্যাহত হচ্ছে। ধান রোপণের পর থেকে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এই উপজেলার প্রায় সাত হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন চাষ এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের জমিগুলো শুকিয়ে মাটি ফাটতে শুরু করেছে, সেই সাথে বেড়েছে পোকার আক্রমণ। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে সম্পূরক সেচ দিচ্ছে তবে তাতেও উপকার মিলছে না, ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ওই উপজেলার ধানচাষিরা। রোববার সরেজমিন লালপুর উপজেলার মুরদাহবিল, চকনাজিরপুর, ওয়ালিয়া ও বড়ময়া গ্রামের ধানের জমি ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের জমি শুকিয়ে মাটি ফেটে গেছে। অনেক জমির ধান বিবর্ণ রূপ ধারন করেছে। কোনো কোনো জমির ধান মরতে শুরু করেছে।
ওয়ালিয়ার ধানচাষি নাইমুর রহমান বলেন, ‘ঈদের আগে বৃষ্টির পানিতে ধান রোপণ করেছি। টানা ১৫ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের জমি ফেটে গেছে, ধানে মাজরাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণ বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, সেচ দিয়েও তেমন উপকার হচ্ছে না।’ ছোটাময়না গ্রামের ধানচাষি আকতারুজামান ভাসা বলেন, ‘অনাবৃষ্টি ও তীব্র খরায় ধানের জমি শুকিয়ে গেছে। ধান বাঁচাতে বাধ্য হয়ে বিঘা প্রতি ৬০০ টাকায় সম্পূরক সেচ দিয়েছি। দুইদিন পরেই আবারো জমি শুকিয়ে যাচ্ছে।’
হাসিবুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেনসহ স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, ‘মৌসুমের প্রায় শেষ সময়ে সামান্য বৃষ্টিতে ধান রোপণের পর থেকে তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে ধানগাছ ঠিকমতো বৃদ্ধি হচ্ছেন। প্রায় জমি শুকিয়ে ধানগাছগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। তারা আরো বলেন, এ বছর মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় এমনিতেই ধান রোপণ করতে দেরি হয়েছে। আবার অনাবৃষ্টি দেখা দিয়েছে এমন হলে ধান আর হবে না। অধিক টাকা খরচ করে সেচ দিয়েও উপকার পাওয়া যাচ্ছে না।’
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে চলতি মৌসুমে লালপুর উপজেলায় পাঁচ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ধান রোপণের লক্ষমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে সাত হাজার ৩৫০ হেক্টর। লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম অনাবৃষ্টির কথা স্বিকার করে বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় কিছু কিছু জমির পানি শুকিয়ে গেছে, তবে কৃষকদের সম্পূরক সেচ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টিপাত হলে কোনো সমস্যা হবে না বলেও তিনি জানান।
স্ব.বা/বা