বাড়ছে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ

কৃষি

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: পাবনার ঈশ্বরদীতে বেশি লাভের আশায় শীতকালীন সবজির আগাম চাষ বাড়ছে। শুধু নিজেদের চাহিদার জন্যই নয়, বাণিজ্যিকভাবেও চাষ হচ্ছে এসব সবজি। কৃষকরা জানান, যে কোন ফসল আগাম চাষ হলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। মুনাফাও বেশি হয়। এ বছর উঁচু জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা। কম সময়ে কম খরচে বেশি মুনাফার জন্য ফুলকপি ও বাঁধাকপির জুড়ি নেই।

বাণিজ্যিকভাবে আগাম সবজি চাষে আলোড়ন তুলেছেন উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম বিশ্বাসের স্ত্রী নুরুন্নাহার। তিনি অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৪-৫ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। নিজেদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি জেলার অর্থনৈতিক উন্নতিতে অবদান রাখছেন। তার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পেয়েছেন।

নুরুন্নাহার বসতবাড়ির আঙিনায় এবং বাড়ির পাশে ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সারাবছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করছেন। ক্ষেত থেকে সরাসরি ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের পাইকাররা সে সবজি কিনে নিয়ে যান। নুরুন্নাহার বলেন, ‘আগাম চাষ করতে পারলে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করলে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করা সম্ভব। এমনকি কীটনাশক ব্যবহার না করেই আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘শীতকালীন সবজির বাজার ধরতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা রোপণ করেছি। কার্তিক মাসের শেষ দিকে সবজি বাজারে উঠবে। এজন্য নার্সারি থেকে সবজি চারা সংগ্রহ করে ২০-২৫ দিন আগে রোপণ করেছি। সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে প্রায় ১০-১৫ হাজার কপির চারা রোপণ করা হবে। প্রতিটি চারার পেছনে খরচ হবে প্রায় ৫-৭ টাকা। আড়াই থেকে ৩ মাসের মধ্যে প্রতিটি কপি ক্ষেতেই বিক্রি হবে ১৫-২০ টাকা মূল্যে। ক্ষেত থেকে ৩ মাসে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয় করার আশা করছি।’

এলাকার কৃষক কামাল ও মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সবজির চারা রোপণের আগে জমি তৈরি করে কিছুদিন রাখা হয়। এতে কপির চারা রোগ-বালাই প্রতিরোধের ক্ষমতা সঞ্চয় করে এবং গাছগুলো সবল হয়। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় চারাগুলো নষ্ট হয়নি। ফলে উৎপাদন খরচ কিছুটা কম হবে।’

মুলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর সরদারপাড়া গ্রামের করিম মিয়া বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে মূলা বীজ ও কপির চারা রোপণ করেছি। চারা রোপণ করার ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে ফসল বাজারে তোলা যায়।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর এ জেলায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের বিভিন্ন সবজি চাষ হয়েছে। চলতি বছরও সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে প্রায় ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে রবি ১৮-১৯ জাতের আগাম সবজি চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘কৃষকরা যে ফসলে মুনাফা পায়, সেটাতেই ঝুঁকে পড়েন। তাই কৃষকরা বেশি মুনাফা লাভের আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *