তানোরে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ

কৃষি
স্টাফ রিপোর্টারঃ এই প্রথম তানোর উপজেলাতে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যেদিকে তাকাই সেদিকেই শুধু সবুজের সমারোহ। দম ফেলার সময় নেই কৃষকের। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত আলুর জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আলু চাষীরা।
বরেন্দ্র খ্যাত নামে পরিচিত রাজশাহী তানোর উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন মাঠে আলুর গাছ বেরিয়ে সবুজে রূপ নিয়েছে। যেদিকে তাকাই শুধু সবুজের সমারোহ। উপজেলার বিভিন্ন আলুর মাঠ ঘুরে দেখা গেছে,সকাল থেকে আলুর জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আলু চাষীরা। শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি জমির আলুর গাছ সুন্দরভাবে বের হওয়ায় কৃষকের মধ্যে এক প্রকার স্বস্তি কাজ করছে। গত’কয়েক বছরের তুলনায় এবার আলুর দাম ভালো থাকায় এবার বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষ করেছে কৃষক।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধান কাটা মাত্র কৃষকরা ঝুকে পড়েন আলু চাষের জন্যে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠে এবার ব্যাপক হারে আলু চাষ হয়েছে। শীতের রাত জেগে বিরামহীন পরিশ্রম করছেন চাষিরা। প্রচন্ড শীতে রাত জেগে আলুর জমিতে দিচ্ছেন পানি সেচ। তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি গত বছর ২০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে বেশ ভালো টাকা আয় করেছেন।
এবার সেই আশায় তিনি প্রায় ২’শ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আলু চাষের খরচ প্রায় দেড়গুন বেশি হবে বলে তিনি জানান। তানোর পৌর এলাকার সোমাসপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন জানান, জীবনের প্রথম ঋণের টাকায় জমি টেন্ডার নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। কিন্তু এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হওয়ায় দাম নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছি।
তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের প্রসিদ্ধ আলু চাষি হালিম মন্ডল বলেন, তিনি গত বছর ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে বেশ ভালো দাম পেয়েছেন। কিন্তু এবার ব্যাপক ভাবে আলু চাষ হওয়ায় তিনিও ১’শ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। একই গ্রামের কৃষক কিতাব আলী বলেন, তিনি গত বছর ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে ভালো ফলন ও দামও ভালো পাওয়ায় এবার ১৫বিঘা জমিতে আলু চাষ করছেন।
কৃষক শিমুল বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। কিন্তু আলুর দাম নিয়ে এক প্রকার শঙ্কা কাজ করছে মনের ভিতরে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তানোরে গত মৌসুমে আলু চাষ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু এবার প্রায় তিনগুন জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার জন্যে সঠিক সময়ে চাষিরা আলু রোপন করতে পেরেছেন। আশা করছি যতই আলু চাষ হোক কৃষকদের লোকসান হবে না। তবে যারা আলু হিমাগারে রাখতে পারবেন তারা বেশী লাভবান হবে বলে তিনি জানান।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *